কুরআন অনলি কুইক রেফারেন্স: (৩) ডাহা মিথ্যা ভবিষ্যদ্বাণী ও প্রতিশ্রুতি!
স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার আল্লাহর রেফারেন্সে ঘোষণা করেছেন যে, ‘অবশ্যই’ আল্লাহ কেয়ামতের দিন পর্যন্ত ইহুদীদের ওপর এমন লোক পাঠাতে থাকবে যারা ইহুদীদের নিকৃষ্ট শাস্তি প্রদান করতে থাকবে। আর, তিনি তার অনুসারীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই বলে যে, আল্লাহ তার প্রতি কুরআন নাজিল করেছে এই কারণে যে ‘যাতে সে মুমিনদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে!’ তিনি আরও দাবী করেছেন যে, যারা তাকে (‘উম্মী নবী’) বিশ্বাস করে তার আনুগত্য ও সাহায্য করবে ও যা তিনি বলেছেন তা অনুসরণ করবে; শুধুমাত্র তারাই সফলতা অর্জন করতে পারবে!
মুহাম্মদের ভাষায়: [1] [2]
৭:১৬৭ (সূরা আল আ’রাফ) – “আর সে সময়ের কথা স্মরণ কর, যখন তোমার পালনকর্তা সংবাদ দিয়েছেন যে, অবশ্যই কেয়ামত দিবস পর্যন্ত ইহুদীদের উপর এমন লোক পাঠাতে থাকবেন যারা তাদেরকে নিকৃষ্ট শাস্তি দান করতে থাকবে।নি:সন্দেহে তোমার পালনকর্তা শীঘ্র শাস্তি দানকারী এবং তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
১৬:১০২ (সূরা নাহল) – “বলুন, একে পবিত্র ফেরেশতা পালনকর্তার পক্ষ থেকে নিশ্চিত সত্যসহ নাযিল করেছেন, যাতে মুমিনদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এটা মুসলমানদের জন্যে পথ নির্দেশ ও সু-সংবাদ স্বরূপ।”
৭:১৫৭- সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল।। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।
>>> আজ যা আমরা নিশ্চিতরূপে জানি তা হলো, মুহাম্মদের এই ‘৭:১৬৭-ভবিষ্যদ্বাণীটি’ একেবারেই মিথ্যা। ইহুদিদের ‘নিকৃষ্ট শাস্তি-দান’ তো অনেক দূরের বিষয়, আজকের পৃথিবীতে এমন কোন ব্যক্তি বা গুষ্ঠির অস্তিত্ব নেই যারা নিদেন পক্ষে ইহুদিদের শাসন করছেন। ইহুদিরা আজ এক শক্তিশালী স্বাধীন রাষ্ট্রের বাসিন্দা, যার নাম ‘ইসরায়েল’। তারা আধুনিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বহু দশক যাবত নিজেরাই নিজেদের শাসন ব্যবস্থা কায়েম রেখেছেন। একইভাবে মুহাম্মদের প্রতিশ্রুতি, “যাতে আল্লাহ মুমিনদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেন”, সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা। কারণ, অমুসলিমরাই আজ বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত, মুসলিমরা নয়। জীবনের সর্বক্ষেত্রে অমুসলিমরাই আজ বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, মুসলিমরা নয়। আজকের পৃথিবীতে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, চিন্তা-ভাবনায়, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, শিক্ষা ও মর্যাদায় ইসলাম অনুসারীরাই পৃথিবীর সর্বনিম্ন; যা মুহাম্মদের উপরি উক্ত ১৬:১০২ ও ৭:১৫৭ দাবীর সম্পূর্ণ বিপরীত।
বর্তমান পৃথিবীতে মুসলিম জনসংখ্যার পরিমাণ প্রায় ১৬০ কোটি (২৩ শতাংশ), আর ইহুদি জনসংখ্যার পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ । ২০১৭ সাল পর্যন্ত মুসলমান জন-গুষ্টির মধ্যে গত ১১৬ বছরের নোবেল পুরষ্কারের ইতিহাসে মোট ৮৮১ জন পুরষ্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র ১২ জন মুসলমান নোবেল বিজয়ীর তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এই ১২ জনের সাত জনই পেয়েছেন নোবেল পুরষ্কারের সবচেয়ে বেশী বিতর্কিত বিষয় ‘শান্তিতে”। দুই জন সাহিত্যে। মাত্র তিনজন বিজ্ঞানে। ১৯৭৯ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে প্রফেসার আবদুস সালাম ও রসায়নে ১৯৯৯ সালে আহমেদ জেওয়াল এবং ২০১৫ সালে আজিজ সানকার (Aziz Sancar)। প্রফেসার আবদুস সালাম-কে তার দেশ পাকিস্তানে মুসলমান বলেই স্বীকার করা হয় না, আর পরের দুইজনই নামে মাত্র মুসলমান। এই তিনজনই গবেষণা চালিয়েছেন অমুসলিম দেশে। অন্যদিকে, এক কোটি ৪৫ লাখ ইহুদী জন-গুষ্টির ১৯৭ জন নোবেল বিজয়ী। অর্থাৎ বিশ্বের প্রায় এক চতুর্থাংশ জন-গুষ্টির (মুসলমান) আহরণ মোট নোবেলের মাত্র এক দশমিক তিন শতাংশ (১.৩%); আর ইহুদীরা বিশ্বজন-গুষ্টি মাত্র ০.২৩ শতাংশ হওয়া সত্বেও তাদের মোট নোবেল পুরষ্কার বিজয়ের পরিমাণ প্রায় ২২ শতাংশ।
এক দশক আগে ডাঃ ফারুক সেলিম এক নিবন্ধে মুসলিম ও অমুসলিম দেশের এক তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেছিলেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন: ‘৫৭ টি মুসলিম দেশের মিলিত সর্বমোট জিডিপি দুই ট্রিলিয়ন আমেরিকান ডলার। যেখানে আমেরিকা একাই ১২ ট্রিলিয়ন, চায়না ৮ ট্রিলিয়ন, জাপান ৩.৮ ট্রিলিয়ন, জার্মানি ২.৪ ট্রিলিয়ন আমেরিকান ডলার (purchasing power parity basis)। প্রায় অর্ধেক আরব মহিলা অক্ষরজ্ঞানহীন। ৫৭ টি মুসলিম দেশের ১৬০ কোটি জনগণের জন্য ৬০০ টির ও কম বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে ভারতে আছে ৮৪০৭ টি এবং আমেরিকায় ৫৭৫৮ টি। মুসলমান জন-গুষ্টির গড়ে প্রতি ১০ লাখে ২৩০ জন বিজ্ঞানী। যেখানে আমেরিকায় প্রতি ১০ লাখে ৪,০০০, জাপানে প্রতি ১০ লাখে ৫,০০০ জন। মুসলমান জন-গুষ্টির গড় শিক্ষিতের হার ৪০ শতাংশ। যেখানে খ্রিষ্টান জন গুষ্টির গড় শিক্ষিতের হার ৯০ শতাংশ।'[3] আজকে বিজ্ঞানের অবদানের কাছে আমরা প্রতি মুহূর্তে নির্ভরশীল। অথচ বর্তমান বিশ্বে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় এমন একটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারও নাই যার মুখ্য আবিষ্কর্তা একজন মুসলমান।
ধর্মান্ধ ইসলাম বিশ্বাসীদের দাবী এই যে, ‘দুনিয়ার সফলতা কোন সফলতা নয়, মুসলমানদের আসল সাফল্য হলো মৃত্যুর পর বেহেশতে প্রবেশ। তাই তারা সর্বদায় সাফল্যমণ্ডিত। আর অমুসলিম কাফেররা সর্বদায় অসফল! কারণ তারা কখনই বেহেশতে প্রবেশ করবে না’ – যা মূলত: মুহাম্মদের দাবী (সূরা কাহফ: ১৮:১-৩ )!
মৃত্যুর পর কী ঘটবে কী ঘটবে না তা প্রমাণ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আমরা নিশ্চিতরূপে জানি, মৃত মানুষ কথা বলতে পারে না ও মৃত্যুর ওপার থেকে কেউ সংবাদও পাঠাতে পারে না। এমত পরিস্থিতিতে যদি কোন ব্যক্তি দাবী করেন যে তিনি “শতভাগ নিশ্চিত” যে মৃত্যুর পর তিনি যেমন-টি চিন্তা করেন, ঠিক তেমনই ঘটবে। কারণ, ‘সৃষ্টিকর্তা’ তাকে তা জানিয়েছে। আর কেউ যদি তার সেই উদ্ভট দাবী মেনে না নেন তবে তিনি তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, হুমকি,শাসানী, ভীতি প্রদর্শন, অসম্মান, দোষারোপ, হামলা ও হত্যার আদেশ জারী করেন; এমন ব্যক্তি নিশ্চিতরূপেই হয় চরম মিথ্যাবাদী ও ভণ্ড, কিংবা মানসিক বিকারগ্রস্ত (Psychotic)! বিজ্ঞানের এই যুগে রুগী ও তার পরিপার্শ্বের মানুষদের নিরাপত্তার খাতিরে আধুনিক চিকিৎসকরা এমন ব্যক্তিদের অত্যাবশ্যকীয় ভাবে তৎক্ষণাৎ (Psychiatric emergency) মানসিক হাসপাতালের তালা-বদ্ধ (Locked unit) কক্ষে ভর্তি করেন। বিষয়-টি এতই জরুরী যে উন্নত বিশ্বে এ সমস্ত রুগী যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে অসম্মতি প্রকাশ করে, তবে চিকিৎসকরা তাকে আইন শৃঙ্খলা/নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তায় জবরদস্তি রূপে (Involuntary commitment) মানসিক হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন।
সংক্ষেপে, বর্তমান বিশ্বে ইহুদীরাই জ্ঞান, বিজ্ঞান, গরিমা ও শক্তিতে ইসলাম ধর্মাম্বলীদের তুলনায় অনেক বেশী অগ্রগামী; আর, মুসলিম জনগোষ্ঠী জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্বে সর্বনিম্ন। অর্থাৎ, আল্লাহর রেফারেন্সে মুহাম্মদের ওপরে বর্ণিত ভবিষ্যদ্বাণী ও প্রতিশ্রুতি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও বানোয়াট!
(চলবে)
তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:
[1] কুরআনেরই উদ্ধৃতি ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ কর্তৃক বিতরণকৃত তরজমা থেকে নেয়া। অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর।
http://www.quraanshareef.org/
[2] কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট ইংরেজি অনুবাদকারীর ও চৌত্রিশ-টি ভাষায় পাশাপাশি অনুবাদ:
[1] কুরআনেরই উদ্ধৃতি ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ কর্তৃক বিতরণকৃত তরজমা থেকে নেয়া। অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর।
http://www.quraanshareef.org/
[2] কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট ইংরেজি অনুবাদকারীর ও চৌত্রিশ-টি ভাষায় পাশাপাশি অনুবাদ:
Paddy Power Casino - Mapyro
ReplyDeleteView the 영주 출장안마 location, 화성 출장마사지 rates, hours, 강원도 출장마사지 directions, phone 공주 출장샵 number, map of Paddy Power Casino and other land-based 상주 출장샵 casinos in the area.